July 28, 2019

অর্থিতা মণ্ডল



আবেষ্টণী

নিপুণ ভেসেছে ছায়া কতদূর বিভাবরী আলো
সেসব জন্মান্তর কথা জীর্ণ বসত বাড়ি
উঠোনে কলমিলতা, গাঢ় ঘুম কফিনের ভেতর
শীত বাড়ে।অভিশাপ ছুঁয়ে আছে রাতের পোশাক
দাগ চিহ্ন ধরে হেঁটে যান বাদক,জড়িয়েছে দশচক্রে সর্পিল আগুন
মন্থনে জাগে বিষ। ধানি শাড়ি মুচিয়েছে বিন্যস্ত শোক,
জমানো মৌচাক জুড়ে বিষণ্ন মধু


বিভাবরী

নিশ্চিহ্ন মুছে যাচ্ছে ছায়া,
অপরাহ্ন শেষ হয়ে এলে আজও ভেসে যায় মান্দাস
ঘূর্ণাবর্ত দহনের ভেতর আরও কিছুক্ষণ সুগন্ধী মেঘ।
সমুদ্র পেরিয়ে গেছেন তিনি,ঝাউ ঝাউ কথা
চিলে কোঠা রেখেছে প্রথম স্পর্শ দাগ,অভিমান তাপ
শ্যাওলা ছেয়ে আছে প্রাচীন শিকড়ের ঘ্রাণ
নোঙর বাঁধেনি কেউ,জোকার কে ঘিরে অভিশাপ
হাটে হাটে কানাকানি নারী ও পুরুষটির  অভিনয় শেষ
ক্লান্ত সন্ন্যাস ছুঁয়ে বালির ঘর,অসংলগ্ন আলাপ
অমাবস্যা গাঢ় হয় খুব, শাঁখ বাজে
রিখটার স্কেল গণনা ভুললে অজানিত উন্মুখ দ্বার



অস্থি

সবকিছু মুছে যায় শুধু এক গন্ধ প্রাচীন
তুমিও চেনো না তাকে বাড়ি কিংবা পী ঠ স্থান
আত্মবিস্মৃত ছুঁয়ে থাকো অদৃশ্য মেঘমল্লার
সাপুড়ের বীণ বাজে,খেলা শেষ বেদেনীর সংসারে
তোমার ঘুম পায় গাঢ় হয়ে আসে বিষ
ছায়া ছায়া হেঁটে গেল নগর সংলাপ
সে এক মায়াবিনী নখের আঁচড়ে কাটে কুহক
তখনো সানাই,তখনো অতলান্ত গভীর বুনন
অতঃপর নেশা ধরে,তুমি তাকে ধোঁয়া ভাবো
বুক ভরে টেনে নাও শ্বাস,সহস্র সহস্র পেছন
হাতছানি আবছায়া মহুয়ার ঘ্রাণ

অপূর্ব গৃহবিদ্যার ভেতর ঈশ্বরী ধারণ করছেন সম্পূর্ণ ঈশ্বর


মেদুর

দু'দিকে দুটো কফির মগ থেকে ধোঁয়া উঠছে ক্রমাগত
মেহগেনি কাঠের টেবিলে গত শতাব্দীর ঘরের গন্ধ
কফিতে চুমুক দিতে দিতে লোকটি হাই তুলল
বিশ্রী রকমের একটা ঘুম,গড়িয়ে যাওয়া আপেলের টুকরো
টেবিলের আরেক দিকে শূন্য একটা অবয়ব
ধোঁয়ার ভেতর অনাগত জন্ম জেগে উঠল,সংগোপনে


নিঃশব্দ আবাহন

এসো নদীটির সামনে এসে দাঁড়ানো যাক
এই নদীটির কোনো নাম নেই
এখানে মায়াবী সুতোর ওপর চাঁদ ঝুলছে
অদ্ভুতভাবে ভেঙে যাচ্ছে রাস্তার নিমগ্ন ধ্যান।

নিঃসঙ্গ ভিজে যাওয়া পোড়ো বাড়িটির গায়ে
আদিতম আশ্লেষের দাগ, হয়ত দুজনে সরে গেছে দূরে
ঘুঙুরে বেজেছে দীর্ঘ শ্বাস।
এভাবেই বসে থাকো চুপচাপ,অনন্ত অপেক্ষা
অন্ধকারে গুঞ্জন ওঠে নিস্তব্ধ কোলাহল
সন্ধ্যা প্রদীপ মুছে গেছে শুধু শাঁখারির অভিমান

নদী সব জানে কিংবা ভুলেছে সেও
গভীর গহ্বরে একা অদৃশ্য পায়ের ছাপ



No comments:

Post a Comment