May 26, 2019

দহর নবম সংখ্যা





সম্পাদকীয়

প্রতিটা মানুষের মনই একটা পরিযায়ী কার্নিশের ধারে বাস করে, সেখানে রোদ বৃষ্টির ছলাকলায় ভরে থাকে আগামীর হাতছানি। কবির কলমে ঘনিয়ে ওঠে--জেগে থাকা বজরায় ধারাবাহিক বর্ষার গুপ্তজন্ম কিংবা হামা দেয় ঘুমন্ত অক্ষর যখন কালো টিপ লুকিয়ে তাকায় আয়নার কোণ থেকে। আমরা তখন অচিরেই মুগ্ধ হয়ে পড়ি। মুগ্ধতাও আসলে এক ধরনের মৌনতা,  যখন মৌনমুখর চৌম্বকক্ষেত্রগুলো ইশারায় হাতছানি দেয় অথচ একটু দখিনা বাতাস দুটি হাতের  মাঝে ঋতুবদলের গল্প হয়ে উঠে হরিয়ালী সন্ধ্যায় ভরে ওঠে নিজস্ব বাগান তখন সেই সৃষ্টি অবশ্যই হয়ে পড়ে সার্বজনীন।

এবার আমাদের  এই সংখ্যা সম্পূর্ণরূপে নারীদের কলমকেই স্বাগত জানিয়েছিল। যদিও সৃষ্টির কোনো প্রান্তেই 'দহর' লিঙ্গভেদকে প্রশ্রয় দেয় না, তবুও মেঘের আঁচলে যখন রামধনু রং উঁকি দ্যায় তখন সেই রঙের অমলিন স্পর্শ মানুষের পরিযায়ী মনের কার্নিশ বেয়ে সাহিত্যের পাতায় চিরস্থায়ী আসন লাভ করে এই কথা বলাই বাহুল্য। এই কথাটাই বর্তমান সংখ্যার প্রত্যেক কবি তাঁদের প্রতিটা অক্ষরে ফুটিয়ে তুলেছেন। যেখানে আজও একটা বেওয়ারিশ মেঘের খুনের জন্য দায়ি থেকে যায় ঘর্মাক্ত শরীর সেখানে শুধু নিজেদের কথায় পাঠকমনকে ভারাক্রান্ত না করে কলম হয়ে উঠেছে সর্বসাধারণের। তাই বোধহয় আজকের উত্তর আধুনিক একজন কবির কণ্ঠস্বরে আমরা পেয়ে যায় এক আশ্চর্য বলিষ্ঠতা; যে বলিষ্ঠতা বলতে পারে, সে আজও আমায় গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ায়, হাড়ের বিছানায় এঁটেল মাটির কবরে।

অক্ষর দিয়ে জীবন আঁকতে আঁকতে জীবনের চর্যাপদে কুয়াশার স্তর পরম্পরাগত ভাবে কবির কলমকে জানিয়ে রাখে যদি ভালোবাসতে দাও তবে আমি থমকে দাঁড়াব, দুদণ্ড জিরিয়ে নেব তোমার ছায়ায়, এই ছায়ায় গড়ে উঠতে পারে সুশীতল শান্তির নীড়। শিরদাঁড়ার অন্তর্লীন সরসতা বাঙ্ময় হলে হিসেবের ফেরিঘাট দিয়ে ঘরে ফেরা চলন্ত কম্পার্টমেন্ট জানে বিয়োগে যোগফলের নানারকম সন্ধি। আর জানে বলেই প্রখর গ্রীষ্মের উত্তাপকে লণ্ডভণ্ড করেও বেঁচে থাকে কবিতার পঙক্তিগুলো। এই সংখ্যার প্রত্যেকটি কবিতার অন্তরে অন্তরে এমন সন্ধির বার্তা আমরা আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পেরে অবশ্যই গর্বিত। আমরা ধন্যবাদ জানাই এই সংখ্যার সমস্ত কবিদের। তাঁদের লেখনীগুণে পরিপুষ্ট আমাদের এই সংখ্যাটা। প্রসঙ্গত, আর একটা কথা অবশ্যই স্মর্তব্য, আজ বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের জন্মদিবস। মহান এই দিনটিকে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণে রেখে 'দহরে'র এই সংখ্যাটাকে পাঠকদের দরবারে উন্মুক্ত করা হলো।


২৬.০৫.২০১৯                  ভালোবাসাসহ ধন্যবাদান্তে
শান্তিপুর, নদীয়া                   সম্পাদকদ্বয়, দহর
                                                



No comments:

Post a Comment