অসিত মণ্ডল

কথা -কোলাজ

পুড়ছে বোশেখ দুপুর। বিন্দু ঘাম নিম্নগতি।
ভিজে একশা গোপন খাদান।

'টিপ সরে গেছে কপালের। '
ভবিতব্য জানে না পথও। তবু যেতে হয়।
রসদ যদিও তীব্র জেহাদ।

'সাবধানে যেয়ো। '
অর্ধেক জীবন। শরীরে ইতিউতি বিদ্রোহী আাঁচ।
কে কবে নিজের খেয়াল সযতনে রাখে!

'খেয়েছ ওষুধ? '
উপেক্ষা হয়তো নিয়তি। আকাশে অভিমানী মেঘ।
ইথারে ভেসে যায় অহেতু অভিলাষ।

'মেঘ রং শাড়ি পড়ো আজ। '
মুখচাপা রোদেলা প্রহর। সংযম ছিঁড়ে ফেলে বৈশাখী ঝড়।
আলজিভ শুষে নেয় বেপরোয়া ঠোঁট।

'এতদিন কোথায় ছিলে? '
নিঘুম দুচোখ। জানালায় জ্যোৎস্না মাখে রাতচরা পাখি।
স্মৃতিরা সিঁধ কাটে আনাচে কানাচে।

'সব ঘুম তোমাকে দিলাম। '
সাপ লুডো পথ। অচেনা ইশারায় হাত ছাড়ে স্বজন।
ফিকে হয় রক্তের টান জীবনের বাঁকে।

'ভালো থেকো, ভালোবেসে। '



ঝড়

হাওয়া অফিসের কোন আগাম সতর্কবার্তা ছিল না
তুমি একবার চোখে চোখ রাখতেই  লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল আমার ভিতর - বসত

খড়কূটো ছাদ উড়ে গেল মুক্তির উল্লাসে
মনের জানলা দরজার কপাট শূণ্যে পাক খেতে লাগল সুতোকাটা ঘুড়ি হয়ে

গেরস্থালি দেওয়ালগুলো খসে পড়ল তাসের ঘরের মত
আড়াআড়ি দু 'ভাগ- হওয়া গাছ হয়ে আমি শুয়ে আছি মাটিতে
কোন ত্রাণ শিবিরের আশ্রয়প্রার্থী নই
শুধু তোমাকে ভালোবাসবো বলে



ভালোবাসা ও বৈধতা

ভালোবাসা ফেরাতে পারি না।
আজন্ম প্রেমিক আমি
জড়ুল চিহ্নের মতো বুকে রাখি প্রেম।

মেঠো পথ, ভাঙা নৌকার গলুই,
দুপুরের রোদে ঝিমনো চায়ের দোকান ...

এসব জন্ম -প্রেমিকের খাসতালুক।
একা কোন সংসারী পাখির বিলাপ,
নদীপারে রেখে যাওয়া পায়ের ছাপ,
লাজুক নালিঘাস ঝোপ,

প্রকাশ্য চুম্বনের দাগ ...
এসব প্রতি রাতে  ক্যানভাসে ছবি হয়ে আসে
আমি বিষাদের দেওয়ালে টাঙিয়ে রেখে
স্বপ্নঘোরে শুনি ...
আগামী বসন্তে শীর্ষ আদালত রায় দেবে ----
শুধু  ভালোবাসা ছাড়া পৃথিবীর সবকিছু অবৈধ।


তবুও বিষাদ

ভালোবাসা এক রাতচরা পাখি।
নিঘুম করুণ চোখে আমাকে ঘুম দিতে আসে।
সংগত কারণেই আমি সংযম হারাই।
নিরেট বোকার মত আগুন চায় আগুন নেভাতে।

মুখ টিপে হাসতে থাকে ভাসতে থাকে অাঁধারের নাভিদেশ।
অন্তর্গত স্রোত তো কোন কপটতা জানে না।
ভাঙাচোরা চাঁদ কালো এক ক্ষত দেখিয়ে
অকারণে ভয় দেখায় সারারাত।
আমি অন্ধকারেই খুঁজে নিই তোমার উড়ো চুল
আর উপোসী শরীর উগরে দেয় বিষাদ আর বিষাদ
রাতচরা পাখিটার চোখে তখন এক দুর্বোধ্য মায়া...



তবুও তুমি

আমার ভালোবাসার ছোঁয়াচ থেকে বাঁচতে
মেঘেদের মত তুমি দূরত্ব বাড়িয়ে নাও

আমার লজ্জাহীন অপেক্ষারা কুনো বক হয়ে
বসে থাকে ঝিলের কোণে

যে পথে কুড়িয়ে নিই অফুরন্ত বিষ আর বিষাদ
সে পথে তোমার স্নিগ্ধ ছায়া পড়ে না
যে আমি স্বাগত  শ্রাবণ বিকেল
সে আমি বাতিল প্রণয় প্রহর
সময়ের ফেরে

তবুও তুমি মেঘের ভাস্কর্যে অমলিন
ভালোবাসার ক্ষতদাগ মুছতে
দূরত্ব কিংবা ভুলপথ কোনটাই যথেষ্ট নয়