January 26, 2019

সম্পাদকীয়


               দহর পঞ্চম সংখ্যা (জানুয়ারি ২০১৯)


কিস্তি শেষের হিমেল বাতাস যখন লুকোচুরি খেলে যায়,  মানব মন রোমান্টিকতায় ভরপুর হয়ে ওঠে।হৃদয়ের কার্নিশ ছুঁয়ে যায় কবিতার পঙিক্তমালা।মেঘেদের প্রেমিকা বলে মনে হয় আর কুয়াশার ক্যানভাসে অক্ষরের ধ্বজা উড়তে উড়তে যাবতীয় কূটকাচালি ভুলে আমরা মেতে উঠি এক অনাবিল আনন্দের যোগসূত্রে। সেই যোগসূত্র কোথাও বইমেলা, কোথাও পুষ্পমেলা, কোথাও নাট্য উৎসব, কোথাও আবার নিবিড় কবিতা উৎসব - আমাদের সৃজনশীলতাকে উদ্বুদ্ধ করে এগিয়ে নিয়ে যায়।

               এই রাস্তায় গত পাঁচ মাস ধরে হাঁটছে 'দহর', তাতে দহরমমহরম কিছু হয়তো হয়ে যায়নি, কিছু ফুলকে দরকারী ভেবে কুড়িয়ে নিয়েছি শুধু, কিছু দড়িকে সাপ ভেবে এড়িয়ে গিয়েছি, কিছু সাপকে অভিশাপ জ্ঞানে হেসে দিয়েছি, তবুও কবিতার উর্ধ্বে যে মানুষ থাকে তাকে অবহেলা করতে শিখিনি; জানি, আমরা কারো বিরাগভাজন হইনি, আবার কারো চাটুকারও হইনি। একাধারে একটা মাধ্যম থেকে বান্ধব হয়ে ওঠার এই প্রক্রিয়ায় 'দহর' নিজেকেই স্বীকার করে গন্তব্য হিসাবে। প্রশ্নটা প্রথম থেকেই ছিল, আর উত্তরটাও : সারা বিশ্বে প্রতিটা মুহূর্তেই অসংখ্য মানুষের জন্ম হচ্ছে অথচ প্রত্যেকেই মানুষ হয়ে উঠতে পারছে না, জন্মদাতা চাইছেন, জনিতৃ চাইছেন - তবুও না। কিন্তু এটাও তো ঠিক, এই অপত্যজনের কেউ কেউই বেঁচে থাকেন সক্ষমতায়। এই নিয়ে ৭০বার মনে করিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও এই তন্ত্র সাধারণের মননে স্বাধীনতা আনতে ব্যর্থ হয়, আমরা জানি, কিন্তু এটাও ঠিক যে, এই তন্ত্রে থেকেই যাবতীয় মুখরা গেয়ে দেওয়া যায় নির্ভয়ে। 

             চলমান সময়গর্ভ থেকে সুভাষচন্দ্র বসুর মতো একজন নেতাজী বেরিয়ে আসছে না দেখে হা-হুতাশ করতে করতেই নিজের হাতে তুলে নিচ্ছি বাঁধ; তা অমান্য করে যারা লিখে চলেছে এই সময়ের কঠিন শরীর তাদের কুর্নিশ জানাতে 'দহর' উদগ্রীব। মসিশক্তির অর্চনায় 'দহর' ভক্তপ্রাণ।

ওই সমস্ত কলম যারা শরীরের থেকে স্মৃতি খুঁটে খুঁটে সময়ের হাতে তুলে দিয়েছে তাদের থেকে সেরা ২০টিকে পাঠকের সামনে রাখলাম। ভালোবাসি বলেই বললাম ভালোবাসি।

সেইসঙ্গে দহরের পক্ষ থেকে কবি-গদ্যকার শ্রী জ্যোতির্ময় মুখার্জীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি, পত্রিকাটি প্রকাশের প্রাক্কালে তিনি  বিশেষ সহযোগিতা করে আমাদের কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।

'দহর' পত্রিকার সঙ্গে থাকুন। সাহিত্য জগতে দলাদলি, লবিবাজি নয়, ভালোবাসার সম্পর্ক দৃঢ় হোক। মুক্ত ও শুদ্ধ, নতুন এবং আরও নতুন লেখালিখির আঙ্গিক খুলে যাক চারপাশে।

                                              ধন্যবাদান্তে,
                                              সম্পাদকদ্বয় 
                                  (সুতনু হালদার ও সৌরভ বর্ধন)
প্রজাতন্ত্র  দিবস                      শান্তিপুর, নদীয়া
২৬/০১/২০১৯

No comments:

Post a Comment