June 30, 2019

সম্পাদকীয়

   


একদিকে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহ অন্যদিকে দেশ জুড়ে তীব্র জলকষ্ট! উভয়বিধ এই সঙ্কট আজকে আমাদের সামনে - আমাদের রেখে যাওয়া ভবিষ্যৎকাল সম্পর্কে ভাবতে ও ভাবাতে বাধ্য  করছে। কিন্তু ভবিষ্যৎ তো অনেক দূরের, এই সমস্যা আজকের জন্যই জ্বলন্ত হয়ে উঠেছে- এ কথা আজ সর্বজনস্বীকৃত। কিন্তু এই পরিস্থিতির জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী, এটাই চিরসত্য। নিজেদের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য আমাদের বেহিসাবি আচরণ আজ আমাদেরই কাঠগড়ায় তুলেছে। তাই এই কঠিন সময়ে কবিতা চর্চা অনেকের কাছে বাতুলতা মনে হতেই পারে, কিন্তু আমরা সেই চিন্তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে উপেক্ষা করে বিনয়ের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, একমাত্র কবিতাই আবহমান মানুষকে যথার্থ শান্তির সন্ধান দিয়ে এসেছে। তাই আজও কবিতা আমাদের পরম বন্ধু। আমাদের সবার আত্মার আত্মীয়। যে বেহিসাবি আচরণ জীবনকে বিড়ম্বিত করে সেই বেহিসাবি পদচারণা কবিতার অন্দরে সমূলে উৎপাটিত হতে বাধ্য, আর বাধ্য বলেই আজকের কবি সোচ্চারে বলে ওঠেন গাছ আর জমির পর্ণমোচন জোনাকির আলোটাকে কটাক্ষে চিনিয়ে দ্যায় মরুভূমির শীৎকার।  তবুও আদিম অভ্যাসের কাছে পৃথিবী পরাজিত না হয়ে বুঝিয়ে দ্যায় ছায়াও আমাদের গৃহকাব্য।

ফ্লুরোসেন্ট আহ্লাদে ভেসে যাওয়া শাহরিক সুখ কবিকেই সর্বপ্রথম ব্যথিত করে। 'দহর' আজ সেই সত্যকেই আপনাদের সামনে তুলে ধরছে। আমাদের বিনীত আর্জি অযথা গাছ কাটবেন না, পুকুর ভরবেন না। ইঙ্গিতের জন্মরেণু স্নায়ু বরাবর ছড়িয়ে ছুঁয়ে আছে নদীটির পাড়ে। বস্তুত জন্মদাগের জঠর থেকে উঠে আসা বাউণ্ডুলে ক্ষুধা টুপটাপ মাটিতে গর্ভসঞ্চারের প্রাক্কালে লাউয়ের মাচায় জড়ো হয়ে থাকা শিশির সঙ্গমের গন্ধে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। ইমোশন ক্লিক করে ভালোবাসা ফিরে আসে কোমল স্পর্শে ঘাসের  নিজস্ব কক্ষপথে, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি যেমন শরীর ভেজায় একসময় ঠিক তেমনই মন ভেজাবে ইচ্ছেগুঁড়ি। এই ইতিবাচক প্রত্যাশাই আমাদের সবার মধ্যে জাগ্রত হোক। অক্ষর সাধনার অমোঘ তৃষ্ণার যে স্বাক্ষর এই সংখ্যার কবিরা আপনাদের সামনে রেখেছেন তাঁদের প্রত্যেককেই যথাযোগ্য সম্মান জানিয়ে প্রত্যেকের সৃষ্টিকে পাঠকের দরবারে উন্মুক্ত করা হ'ল।
                                 
৩০.০৬.২০১৯                  ভালোবাসায় ধন্যবাদান্তে
শান্তিপুর, নদিয়া            সুতনু হালদার ও সৌরভ বর্ধন
                                           সম্পাদকদ্বয়, দহর




No comments:

Post a Comment